রাজা তুতেন খামেনের ব্যবহৃত কন্ডম - BD Today Viral

এইমাত্র

Post Top Ad

Post Top Ad

সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

রাজা তুতেন খামেনের ব্যবহৃত কন্ডম

history-of-condom-and-king-tutankhamun
রাজা তুতেন খামেনের ব্যবহৃত কন্ডম

সাড়ে তিন হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরের কিশোর রাজা বা ফারাও ছিলেন তুতেনখামেন। পিতার মৃত্যুর পরে ৯ বছর বয়সেই সিংহাসনে বসেন। দশ বছর রাজত্ব করার পরে হঠাৎই রহস্যময় কারণে মৃত্যু বরণ করেন তিনি। অজানা কোনও কারণে বেশ তাড়াতাড়ি কিশোর ফারাওকে বিপুল পরিমাণ ঐশ্বর্য ও তার ব্যবহার্য অলংকারাদি সহ সমাধিস্থ করা হয়।


তুতেনখামেনের সমাধিস্থল আবিষ্কারের পর এর ঐশ্বর্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার এর পুর দল। তারা বলে উঠেন, সত্যিই এক বিস্ময়কর ব্যাপার বটে! ১৯২২ সালের ৪ নভেম্বর মিশরের অকালপ্রয়াত সম্রাটের সমাধিতে প্রবেশের পথ আচমকাই বেরিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের হাতে। যদিও তুতেনখামেনের সোনার শবাধার-সহ মমি আবিষ্কার হতে সময় গড়িয়ে যায় ১৯২৫ সাল পর্যন্ত।


তুতেনখামেন এর মমি
তুতেনখামেনের  মমি

ফারাওদের অন্যান্য রাজাদের তুলনায় তুতানখামেনের সমাধিক্ষেত্র বেশ ছোট ছিল। ইতিহাসবিদদের মতে, তাঁর মৃত্যুর পর সত্তর দিনের মধ্যে বেশ তড়িঘড়ি করে মমি তৈরি করে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। প্রাচীন মিশরীয় বিশ্বাস অনুসারে, ফারাও বা অন্য গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাঁদের ব্যবহৃত যাবতীয় সামগ্রী মৃতদেহের সঙ্গে রেখে দেওয়ার রীতি ছিল। তুতেনখামেনের সমাধিতে স্বর্ণপালঙ্ক, স্বর্ণসিংহাসন, সোনার শবাধারের ঐশ্বর্যে তামাম বিশ্ব হতচকিত হয়ে পড়ে। সোনা তো শুধু নয়! রুপো, মেহগনি কাঠ, হাতির দাঁত থেকে শুরু করে আধুনিক উপকরণের কোন কিছুরি কমতি ছিল না এই ছোট সমাধির বদ্ধ কক্ষে।


nat-geo-items
তুতেনখামেনের  ব্যবহৃত সামগ্রী

তার মমির সঙ্গেই পাওয়া গিয়েছিল একটি ছোট্ট চামড়ার থলি, যার সঙ্গে জড়ানো ছিলো কোমরে বেঁধে নেওয়ার ফিতে। ছুলছেরা বিশ্লেষণ আর গবেষণার পরে বোঝা যায়, জিনিসটি আসলে সে-সময়ের কন্ডোম। বিস্ময়ের কথাই বটে! কয়েক হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরীয়রাও কন্ডোমের ব্যবহার করতেন! এই আবিষ্কার তখন আধুনিক বিজ্ঞানকেও চমকে দেয়। 


তুতেনখামেনের কনডম
তুতেনখামেনের কনডম

কন্ডোমের মধ্যে পাওয়া ডিএনএর পরীক্ষা করা হয়। জানা গেল, সেটি স্বয়ং তুতেনখামেনেরই ব্যবহৃত। গবেষকরা এই সিদ্ধান্তেও পৌঁছন যে, কন্ডোমটি গরুর পাতলা চামড়া দিয়ে তৈরি, সেটি গর্ভনিরোধক সরঞ্জাম হিসাবেই মমির সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল, কোনও প্রাচীন রীতি-নীতি এবং ঐতিহ্য পালনের সঙ্গে এর যোগসূত্র নেই। শুধু তা-ই নয়, তুতেনখামেনের লিঙ্গটি প্রায় নব্বই ডিগ্রি উত্থিত অবস্থায় তাঁকে মমি করা হয়েছিল। মমি আবিষ্কারের কিছু পরেই লিঙ্গটি নিখোঁজ হয়, পরে জানা যায়, গবেষকরা সেটি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে রেখেছেন।


তুতেনখামেনের মমিতে পাওয়া এই কন্ডোমটি ইতিহাসের প্রাচীনতম প্রথম আবিষ্কৃত কন্ডোম। উত্থিত লিঙ্গের সম্ভাব্য কারণ ধর্মাচরণের সঙ্গে যুক্ত। মিশরীয় সভ্যতার রীতি অনুসারে তুতেনখামেনকে দেবতা ওসিরিসের অবতার হিসাবে দেখা হত। অন্য দিকে, প্রাচীন কালেই মিশরবাসী নানা রঙের কন্ডোম ব্যবহার শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক স্তরের লোকজনের জন্য নির্দিষ্ট বর্ণের কন্ডোমের চল ছিল।


Ancient condoms
প্রাচীন কনডম

কন্ডোমের প্রাচীন ইতিহাস মিশরের বাইরেও রয়েছে বলে প্রমণ পান বিশেষজ্ঞরা। কায়রো লাইব্রেরি এবং পুরনো গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রাচীন গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের রাজা মিনোস এক ভয়ংকর সমস্যায় পড়েন। রাজার সঙ্গে সঙ্গমের পরেই আশ্চর্যজনক ভাবে মারা যাচ্ছিলেন রানি এবং বাঁদিরা। রাজার শুক্রাণুতে সাপের ও বিষ রয়েছে, রাজ বদ্দিদের কাছে এমন ধারণাও দানা বাঁধে। এই সময় বুদ্ধিমতী রানি পাসিফি একটি উপায় বার করেন। শুয়োরের পাতলা চামড়া নিজের যৌনাঙ্গে লাগিয়ে রাজার সঙ্গে মিলিত হতেন। এ ভাবেই প্রাণে বেঁচে যান এই রানি। 


মিশরীয়দের কিছু পরে রোমানরা প্রাণীদেহের ( ছাগল-ভেড়া ও শূকরের) পাতলা চামড়া বা রগ দিয়ে থলে তৈরি করে গর্ভ নিরোধক হিসেবে ব্যবহার করতেন পুরুষরা। নিউগিনির প্রাচীন বাসিন্দারা গর্ভনিরোধক হিসেবে বিশেষ কিছু উদ্ভিদের নির্যাস স্ত্রীদেহে ব্যবহার শুরু করেছিলেন। সে সময়ের প্রায় সমস্ত সভ্যতায় পুরুষেরা মিলনের ঠিক পূর্বে স্ত্রী যৌনাঙ্গে ছয় ইঞ্চি লম্বা বিশেষ পাতা দিয়ে প্রস্তুত ফানেল ব্যবহার করতেন, যার উপরের অংশ খোলা আর নিচের অংশ বন্ধ রাখা হত।

leaf condom পাতার কনডম
পাতার কনডম

রোমানরা প্রথমে কন্ডোম নিয়ে তেমন ভাবত না, পরে তাঁদের চিন্তায় ফেলেছিল যৌন রোগ সিফিলিস। সিফিলিসের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে তাঁরা প্রাণীদেহের পাতলা চামড়ার ব্যবহার শুরু করেন। ষোড়শ শতকের ইতালীয় শরীরতত্ত্ববিদ গাব্রিয়েল ফালোপ্পিও পুরুষের যৌনাঙ্গে ভেড়া ও ছাগলের পাতলা চামড়ার টুপি পরিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন, তাতে সিফিলিসের মতো মারাত্মক যৌন রোগ বাধাপ্রাপ্ত হয়।


পঞ্চদশ শতকে যখন যৌন রোগ সিফিলিস আছড়ে পড়ে ফ্রান্সের সেনাদলে, তখন কন্ডোম ব্যবহার বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। সেই সময় থেকে প্রাণীদেহের পাতলা চামড়া দিয়ে কন্ডোম তৈরির বহুল ব্যবহার শুরু হয়। শুধু তা-ই নয়, বড় মাছের নাড়িভুঁড়িকেও কন্ডোম হিসেবে  ব্যবহার করা হত।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

Post Top Ad