ভেনেজুয়েলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি
এবং এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েনের
কৌশল।
ভেনেজুয়েলা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বহু বছর ধরেই উত্তপ্ত। বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই বিরোধ আরও তীব্র হয়েছে। ভেনেজুয়েলায় রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেলের ভাণ্ডার, আর এই তেল নিয়েই অনেকাংশে দ্বন্দ্বের মূল। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে মাদুরো সরকার দুর্নীতি,
মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রাজনৈতিক দমননীতি চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে একের পর এক অর্থনৈতিক
নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এমনকি আন্তর্জাতিক মহলকেও চাপ দিয়েছে যাতে মাদুরো সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়। কিন্তু তাতেও ভেনেজুয়েলা টলতে রাজি হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে গোপন গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার সীমান্তবর্তী এলাকায় সামরিক মোতায়েন বৃদ্ধি করেছে। এবার তারা বিশেষভাবে পাঠাচ্ছে
F-35 Lightning II যুদ্ধবিমান। F-35 হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত স্টেলথ যুদ্ধবিমানগুলোর একটি। এর মূল বৈশিষ্ট্য হলো—শত্রুপক্ষের রাডারে ধরা না পড়া, অতিস্বনক গতিতে উড়তে পারা, একসঙ্গে আকাশ ও ভূমি টার্গেট ধ্বংস করার ক্ষমতা, উন্নত সেন্সর ও ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার
সিস্টেম।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকেই কলম্বিয়া,
ক্যারিবিয়ান সাগর এবং সমুদ্রপথে
নৌবাহিনীর
উপস্থিতি জোরদার করেছিল। এখন F-35 এর মোতায়েন তাদের হামলার প্রস্তুতি স্পষ্ট করছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় হামলা চালানোর পেছনে কিছু সম্ভাব্য কারণ রয়েছে—
তেল ও প্রাকৃতিক
সম্পদ দখল– ভেনেজুয়েলার তেলের ভাণ্ডার বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর লোভের কেন্দ্র।
রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার– লাতিন আমেরিকায় চীন ও রাশিয়ার প্রভাব বাড়ছে। মাদুরো সরকার রাশিয়া ও ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তাই ওয়াশিংটন এই প্রভাব ঠেকাতে চায়।
মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের অজুহাত – যুক্তরাষ্ট্র সবসময় গণতন্ত্র রক্ষার নামে সামরিক অভিযান চালিয়ে এসেছে। ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা তা দেখেছি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে—ভেনেজুয়েলা কি যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিধর দেশের সঙ্গে টিকতে পারবে?
ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনী সংখ্যায় ছোট হলেও তাদের হাতে রয়েছে রাশিয়ান তৈরি SU-30 যুদ্ধবিমান, আধুনিক এস-৩০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ট্যাঙ্ক, হেলিকপ্টার ও হাজার হাজার সৈন্য।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, ভেনেজুয়েলার পাশে রাশিয়া ও ইরান দাঁড়িয়ে যেতে পারে। যদি তারা অস্ত্র ও প্রযুক্তি সরবরাহ করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ সহজ হবে না।
এখন যদি যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় আক্রমণ চালায়, তবে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে।
চীন ও রাশিয়া সরাসরি মার্কিন আগ্রাসনের বিরোধিতা করবে।লাতিন আমেরিকার অনেক দেশ ভেনেজুয়েলার প্রতি সহানুভূতি দেখাবে।
অপরদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন হয়তো কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন করবে।এমন পরিস্থিতি
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকিকেও উস্কে দিতে পারে, যদি বড় শক্তিগুলো সরাসরি মাঠে নামে।
এবার আসি এফ-৩৫ এর কৌশলগত গুরুত্বে।এগুলো শত্রুর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অচল করতে পারবে।ভেনেজুয়েলার রাডার এফ-৩৫ ধরতে পারবে না, ফলে হঠাৎ আক্রমণে রাজধানী কারাকাস পর্যন্ত টার্গেট করা সম্ভব।এর মাধ্যমে মার্কিন নৌবাহিনী ও স্থলবাহিনীর জন্য আকাশপথ একেবারে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
তাই, ভেনেজুয়েলার জন্য এফ-৩৫ এক বড় হুমকি।
তাহলে কি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় পূর্ণমাত্রার আক্রমণ চালাবে?
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এটি হতে পারে শুধু চাপ প্রয়োগের কৌশল, যাতে মাদুরো সরকার নতি স্বীকার করে।আবার কেউ কেউ বলছেন, সীমিত আক্রমণ হতে পারে, যেমন—সামরিক ঘাঁটি বা তেল শোধনাগার টার্গেট করা।তবে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ হলে তা শুধু ভেনেজুয়েলা নয়, পুরো লাতিন আমেরিকা ও বিশ্ব অর্থনীতিকে কাঁপিয়ে দেবে।
আমরা জানি যুদ্ধ কখনোই কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না।কিন্তু বিশ্বশক্তির প্রতিযোগিতা, তেলের নিয়ন্ত্রণ,
আর প্রভাব বিস্তারের
লড়াই—এসবের কারণে ভেনেজুয়েলা যেন পরিণত হচ্ছে এক নতুন যুদ্ধক্ষেত্রে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই
এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে, আর ভেনেজুয়েলাও প্রস্তুত প্রতিরোধের।এখন দেখার বিষয়—এটি কি সত্যিই যুদ্ধের দিকে যাবে, নাকি শেষ পর্যন্ত কূটনীতির টেবিলে মীমাংসা হবে?
আপনারা কী মনে করেন? যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলায় আক্রমণ করবে, নাকি শুধু ভয় দেখাচ্ছে?
কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
#Venezuela #USA #VenezuelavsUS #WarNews #F35 #MilitaryConflict #WorldNews #VenezuelaVsUSA #Venezuelaarmy #Venezuelaweapons #BreakingNews #Venezuelanews
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন