মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন: বিশ্ব কি তাঁকে ভুলে যাবে? Compassionate Prime Minister Jacinda Ardern - BD Today Viral

এইমাত্র

Post Top Ad

Post Top Ad

মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫

মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন: বিশ্ব কি তাঁকে ভুলে যাবে? Compassionate Prime Minister Jacinda Ardern

জেসিন্ডা আরডার্ন... নামটা শোনামাত্রই অনেকের মনে ভেসে ওঠে মানবিক নেতৃত্বের প্রতীক। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে তিনি শুধু একজন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, ছিলেন সমবেদনা, দৃঢ়তা এবং আধুনিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের এক অনন্য উদাহরণ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ব কি তাঁকে ভুলে যাবে?

Jacinda Ardern

জেসিন্ডা আরডার্ন ২০১৭ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি তখন বিশ্বের সবচেয়ে কমবয়সী নারী প্রধানমন্ত্রীদের একজন। তরুণ নেতৃত্ব, সহজ-সরল জীবনযাপন আর অসাধারণ যোগাযোগ দক্ষতার কারণে দ্রুত তিনি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।


২০১৯ সালে যখন ক্রাইস্টচার্চে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ৫১ জন নিহত হন, তখন জেসিন্ডা আরডার্নের প্রতিক্রিয়া বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনি হিজাব পরিধান করে মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, শোকাহত পরিবারগুলোকে আলিঙ্গন করেছিলেন, আর দেখিয়েছিলেন রাজনীতি শুধু ক্ষমতার খেলা নয়, এটা মানবতার সেবা।


এরপর এলো কোভিড-১৯ মহামারী। দ্রুত লকডাউন, কঠোর সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং পরিষ্কার যোগাযোগের মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডকে তিনি বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশে পরিণত করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ‘জীবন আগে, অর্থনীতি পরে’ এই বার্তাই বিশ্বকে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছিল।


আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মা হওয়া, শিশুকে সংসদে আনা এসবের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছিলেন নেতৃত্ব মানে কেবল কড়া নীতির খেলা নয়, বরং মানবিকতা আর স্বাভাবিক জীবনও এর অংশ হতে পারে।


তবে ২০২3 সালে তিনি হঠাৎই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তাঁর কথায়- “আমি আর যথেষ্ট শক্তি পাচ্ছি না এই দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার।” রাজনীতিতে এমন সৎ আত্মসমর্পণ খুবই বিরল। অনেকে এটাকে দুর্বলতা ভেবেছেন, আবার অনেকে মনে করেন, এটি তাঁর সততা এবং স্বচ্ছতার প্রমাণ।


এখন প্রশ্ন দাঁড়ায়,- বিশ্ব কি তাঁকে ভুলে যাবে? হয়তো সময়ের সাথে সাথে নতুন নেতা, নতুন ঘটনা আসবে, তাঁর নাম কম শোনা যাবে। কিন্তু ইতিহাসে যেসব নেতারা মানবিকতার প্রতীক হয়ে থাকেন, তাঁদের কখনো ভোলা যায় না।


জেসিন্ডা আরডার্ন দেখিয়েছেন রাজনীতি মানে ঘৃণা নয়, ভালোবাসা দিয়েও দেশ চালানো সম্ভব। তিনি হয়তো আজ নেতৃত্বে নেই, কিন্তু তাঁর আদর্শ এবং দৃষ্টান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রেরণা হয়ে থাকবে। “ভুলে যাওয়া যায় রাজনীতিবিদকে, কিন্তু মানবিক নেতাদের কখনো না। তাই জেসিন্ডা আরডার্নের নাম ইতিহাসে থেকে যাবে এক আলোকবর্তিকা হয়ে।”


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

Post Top Ad