ব্রিটিশ রাজপরিবার, যে পরিবার শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ক্ষমতা, ঐতিহ্য ও বিতর্কের প্রতীক। এবং এখন, নতুন প্রজন্মের মুখ- যুবরাজ উইলিয়াম, দিচ্ছেন এক যুগান্তকারী ঘোষণা: “আমি রাজা হলে, রাজতন্ত্রের ধরনটাই বদলে যাবে।”
যুবরাজ উইলিয়াম, রাজা চার্লসের জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে রাজতন্ত্রকে তাল মিলিয়ে চলতেই হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, রাজপরিবার আর শুধু ঐতিহ্যের প্রতীক নয়; বরং জনগণের সেবায় নিবেদিত এক বাস্তব প্রতিষ্ঠান হওয়া উচিত।
উইলিয়ামের এই বক্তব্য অনেকের কাছে রাজকীয় মানসিকতার এক নতুন অধ্যায়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন,- “রাজতন্ত্র যদি জনসাধারণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে তার অস্তিত্বই অর্থহীন।” এই মন্তব্যে পুরো ব্রিটেনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
কেউ বলছেন, এ এক সতেজ হাওয়া, রাজপরিবারে সংস্কারের ইঙ্গিত।আবার অনেকে প্রশ্ন তুলছেন- এই পরিবর্তন কি আসলেই সম্ভব?কারণ ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ভিত্তিই গড়া ঐতিহ্য, মর্যাদা ও সীমাবদ্ধ রাজকীয় ক্ষমতার ওপর।
উইলিয়াম ছোটবেলা থেকেই রাজপরিবারের দায়িত্ববোধের মধ্যে বড় হয়েছেন।তবুও তিনি চান, রাজতন্ত্র যেন হয় আরও মানবিক, আরও ঘনিষ্ঠ।তিনি জনগণের মাঝে কাজ করতে ভালোবাসেন, কখনও গৃহহীনদের আশ্রয়কেন্দ্রে, কখনও হাসপাতালের শিশুদের পাশে।তাঁর কাজের ধরন থেকেই বোঝা যায়, ভবিষ্যতের রাজা হতে যাচ্ছেন এক নতুন যুগের প্রতীক।
উইলিয়ামের স্ত্রী কেট মিডলটনও এই পরিবর্তনের পাশে আছেন।তাঁরা একসঙ্গে চাচ্ছেন, রাজপরিবারের প্রভাব যেন রাজনীতি নয়, বরং সমাজসেবা ও মানবতার ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকে।তবে অনেকে মনে করেন, রাজা হওয়ার পর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা তাঁকে এই আদর্শ বাস্তবায়নে বাঁধা দিতে পারে।কারণ যুক্তরাজ্যে রাজা বা রানীর ভূমিকা মূলত সাংবিধানিক।
তবে ইতিহাস সাক্ষী- প্রতিটি প্রজন্মেই কোনো না কোনো রাজা রাজতন্ত্রকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
তাই প্রশ্ন উঠছে- যুবরাজ উইলিয়াম কি সেই মানুষ, যিনি শতাব্দীপ্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানকে আধুনিক রূপ দেবেন?সময়ই বলবে, তাঁর রাজত্বে রাজতন্ত্র কতটা বদলাবে। কিন্তু একটা ব্যাপার নিশ্চিত, যদি উইলিয়াম সত্যিই রাজা হন, তবে তিনি কেবল এক রাজা হবেন না,-
তিনি হবেন পরিবর্তনের প্রতীক- এমন এক রাজা,
যিনি রাজত্ব নয়, মানবতাকেই বেছে নেবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন