ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শান্তি’ প্রস্তাবের আড়ালে ভয়ংকর পরিকল্পনা! - Trump’s Gaza ‘Peace’ Deal - BD Today Viral

এইমাত্র

Post Top Ad

Post Top Ad

বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫

ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শান্তি’ প্রস্তাবের আড়ালে ভয়ংকর পরিকল্পনা! - Trump’s Gaza ‘Peace’ Deal

Trump’s Gaza ‘Peace’ Deal

ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা ‘শান্তি’ প্রস্তাবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিষয়টি অস্পষ্টভাবে এসেছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই যুদ্ধে ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত, ১ লাখ ৬৮ হাজার জন আহত এবং কয়েক হাজার শিশু অনাহারে মারা গেছে। সর্বশেষ গাজা সিটি দখল করতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলে। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য যুগের পর যুগ ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য বিশ্বজনমত জোরদার হয়েছে। গত ২৯শে সেপ্টেম্বর সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এরপর নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে গাজা যুদ্ধ বন্ধের জন্য ২০ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। যেখানে হামাসকে উচ্ছেদ করে ‘টেকনোক্র্যাটিক ফিলিস্তিনি কমিটি’ গঠনের কথা রয়েছে। সেই কমিটিকে তদারক করার জন্য একটি ‘শান্তি পরিষদ’ গঠন করা হবে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে। তবে চেয়ারম্যান প্রধান থাকবেন ট্রাম্প নিজেই। ট্রাম্প হামাসকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘মেনে নাও, নইলে যুদ্ধ চলবে।তবে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। 


তবে ট্রাম্প বলেছেন,  ‘আমরা কেবলই হামাসের জবাবের অপেক্ষায় রয়েছি।সব আরব দেশ, মুসলিম দেশগুলো এতে সম্মতি দিয়েছে। ইসরায়েল সম্মতি দিয়েছে। হামাস যদি সম্মতি না দেয়, তাহলে চরম পরিণতি হবে। নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পিএ গাজায় আসতে পারবে না, হামাসও না। পরিকল্পনার ১৭ নম্বর দফায় বলা হয়েছে, হামাস যদি পরিকল্পনা গ্রহণে বিলম্ব করে কিংবা প্রত্যাখ্যান করে তবু ‘সন্ত্রাসমুক্ত এলাকায়’ নতুন গঠিত কমিটি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। বিশ্লেষক রিমা হোসেইনের মতে, ‘এটা কোনো শান্তি প্রচেষ্টা নয়, ইসরায়েলের আধিপত্যের নতুন রূপ। পিএ-কে বাইপাস করে গাজাকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।’ কিন্তু ফিলিস্তিনিরা এই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে রাজি নয়। কেননা, এতে কেবল ‘প্রতিশ্রুতি’ আছে, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কোনো সম্ভাবনা নেই।

তাহলে এই ‘শান্তি পরিকল্পনা’ কি আদৌ শান্তি আনবে, নাকি ফিলিস্তিনিদের জন্য এটা হবে একটা নতুন শৃঙ্খল? ফিলিস্তিনি-আমেরিকান বিশ্লেষক ওমর বদ্দার এই পরিকল্পনাকে আখ্যা দিয়েছেন ‘পয়জন পিল’ বলে। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবে শর্ত সাপেক্ষে এবং অস্পষ্টভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনা ঘোষণার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘কয়েকটি মিত্রদেশ “বোকার মতো” ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, যদি উভয় পক্ষ (ইসরায়েল ও হামাস) প্রস্তাব মেনে নেয়, তবে যুদ্ধ মুহূর্তেই থেমে যাবে। গাজায় আটক সব জীবিত ও মৃত জিম্মিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হবে আর ইসরায়েলে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। নতুন ব্যবস্থায় গাজা শাসনের দায়িত্ব নেবে একটি ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট সরকার, যার তত্ত্বাবধানে থাকবে আন্তর্জাতিক একটি পর্ষদ (বোর্ড অব পিস)। সেখানে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। ইসরায়েলও গাজা দখল করবে না বা এই ভূখণ্ডকে নিজের সঙ্গে যুক্ত করবে না।


ট্রাম্পের বর্তমান পরিকল্পনা মূলত তার ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর ‘গাজা রিভিয়েরা’ প্রস্তাবেরই ছায়া। সে সময় তার ‘গাজা রিকনস্ট্রাকশন, ইকোনমিক অ্যাকসিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্ট (GREAT) প্রকল্পে গাজাকে দুবাই-স্টাইলের রিসোর্টে রূপান্তরের কল্পনা করা হয়, যেখানে থাকবে স্কাইস্ক্র্যাপার, কৃত্রিম দ্বীপ, ‘ট্রাম্প রিভিয়েরা’ এবং ‘ইলন মাস্ক স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং জোন’।


৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে ৯ হাজার ডলারের ‘রিলোকেশন প্যাকেজ’ দিয়ে ‘স্বেচ্ছায়’ অন্য দেশে সরানোর পরিকল্পনা ছিল। পরে আরব রাষ্ট্রনেতারা ও জাতিসংঘ এটিকে ‘পাগলামি’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। এমনটি ইসরায়েলে জনপ্রিয় দৈনিক হারেৎজ ‘ট্রাম্পিয়ান গেট-রিচ-কুইক স্কিম’ বলে উপহাস করে। পরে প্রকাশ পায় যে, এই প্রস্তাবের নেপথ্যে ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।


গাজার মানুষ ত্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে ‘হাস্যকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।তারা বলছে ‘এটা স্পষ্ট যে এই পরিকল্পনা অবাস্তব, এটি এমন শর্ত দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল উভয়ে জানে হামাস কখনো মানবে না। আমাদের জন্য এর অর্থ হলো যুদ্ধ ও কষ্ট অব্যাহত থাকবে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

Post Top Ad