আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে। এই বিশ্লেষণধর্মী ভিডিওতে জানুন- কী ঘটছে দুই দেশের মধ্যে, কারা আছে পেছনে, এবং এর প্রভাব কতদূর যেতে পারে।
নিরব, উত্তপ্ত সীমান্ত…দুই প্রতিবেশী মুসলিম দেশ - আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। আবারও মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে।প্রশ্ন উঠছে -এই লড়াই কি কেবল সীমান্তের বিবাদ, নাকি বড় কোনো ভূরাজনৈতিক ঝড়ের শুরু? সম্প্রতি আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে তীব্র গোলাগুলি হয়েছে। দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে সীমান্ত অতিক্রম করে হামলার জন্য। এই সংঘর্ষে কয়েকজন সৈন্য নিহত এবং বেসামরিক নাগরিক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। পাকিস্তান দাবি করছে - আফগান সীমান্ত থেকে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান, অর্থাৎ টিটিপি নামের জঙ্গিগোষ্ঠী তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে,আর আফগান সরকার সেই জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে।
অন্যদিকে, আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন বলছে - পাকিস্তান তাদের সীমান্তে গোলাবর্ষণ করে নিরীহ মানুষ হত্যা করছে। তাদের অভিযোগ, ইসলামাবাদ এখন নিজের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ঢাকতে কাবুলকে দোষারোপ করছে।
কিন্তু এই সংঘাতের পেছনে শুধু সীমান্ত সমস্যা নয় - রয়েছে বড় শক্তিগুলোর হিসাব-নিকাশও। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর পুরো অঞ্চলটাই এখন ক্ষমতার শূন্যতায় ভুগছে। চীন “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ” এর অংশ হিসেবে পাকিস্তানের সাথে বিশাল অর্থনৈতিক প্রকল্প চালাচ্ছে, অন্যদিকে রাশিয়া মধ্য এশিয়ায় নিজের প্রভাব বাড়াতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে অস্থিতিশীলতা মানে গোটা দক্ষিণ এশিয়া নতুন অস্থিরতার মুখে পড়তে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন - যদি এই সংঘাত বাড়তে থাকে, তাহলে শুধু দুই দেশ নয়;ভারত, ইরান, এমনকি মধ্য এশিয়ার দেশগুলোও এর প্রভাব থেকে বাঁচবে না।জঙ্গিবাদ, শরণার্থী সমস্যা, এবং অস্ত্র পাচারের মতো ইস্যুগুলো আবার মাথাচাড়া দিতে পারে।তবে কূটনৈতিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। চীন, তুরস্ক ও কাতার উভয় দেশকে সংলাপে ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে - তালেবান কি পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের পুরনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখবে, নাকি এবার নতুন জোট গড়বে অন্য শক্তির সঙ্গে? বিশ্ব রাজনীতির বিশ্লেষকরা একথা বলছেন - এই মুহূর্তে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্ত হলো দক্ষিণ এশিয়ার বারুদভর্তি বাক্স। যে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত পুরো অঞ্চলে আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারে।
শেষমেশ একটাই প্রশ্ন- এই সংঘাত কি সাময়িক, নাকি ভবিষ্যতের বড় যুদ্ধের পূর্বাভাস? সময়ই দেবে এর উত্তর।
আপনারা কী মনে করেন- মন্তব্যে জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন