উত্তর কোরিয়া আবারও বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে! এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে, পিয়ংইয়ং তার সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র - হোয়াসং-২০ (আইসিবিএম) উন্মোচন করেছে।
কথিত আছে যে এই ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ১৫,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি, যা মার্কিন মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম - কিম জং উনের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রকৃত প্রতীক।
বিশ্বজুড়ে যখন পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চলছে টানাপোড়েন, ঠিক তখনই আবারও বিশ্বকে চমকে দিল উত্তর কোরিয়া!তাদের সর্বাধুনিক আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র “হোয়াসং-২০” (Hwasong-20) প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে প্রদর্শন করেছে দেশটি।পিয়ংইয়ং-এর কেন্দ্রীয় সামরিক প্যারেডে এই বিশাল ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রদর্শিত হয়, যা উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তির নতুন প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।দৃশ্যটি ছিল সত্যিই রোমহর্ষক হাজারো সৈন্যের সমাবেশ, মার্চপাস্টের গর্জন, আর আকাশে আতশবাজির আলোয় ভেসে উঠছিল বিশাল এক ট্রান্সপোর্টার, যার ওপরে স্থাপিত ছিল ‘হোয়াসং-২০’।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নতুন মিসাইলটি আগের সব মডেল যেমন ‘হোয়াসং-১৭’ বা ‘হোয়াসং-১৮’-এর থেকেও উন্নত।এটির সম্ভাব্য রেঞ্জ ১৫,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি, অর্থাৎ এটি যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো অংশে আঘাত হানতে সক্ষম।এতে ব্যবহৃত হয়েছে সলিড-ফুয়েল ইঞ্জিন, যা তরল জ্বালানির তুলনায় দ্রুত প্রস্তুত ও মোতায়েনযোগ্য।এর ফলে মিসাইলের প্রতিক্রিয়া সময় অনেক কমে যায়, যা একে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, “হোয়াসং-২০” হচ্ছে কিম জং-উনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফলাফল।কিম নিজে প্যারেডে উপস্থিত থেকে এই মিসাইলের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন
“এটি আমাদের জাতির নিরাপত্তা এবং সার্বভৌম শক্তির প্রতীক।”
বিশ্বের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এখন এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রকৃত সক্ষমতা বিশ্লেষণ করছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান একে নতুন উদ্বেগ হিসেবে দেখছে।তারা বলছে, এটি যদি পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়, তাহলে তা বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সলিড ফুয়েল প্রযুক্তি মানে এটি দ্রুত লঞ্চ করা সম্ভব শত্রু বুঝে ওঠার আগেই হামলা চালানো যাবে।আর এই প্রযুক্তিই উত্তর কোরিয়াকে এখন আরও অনিশ্চিত করে তুলছে আন্তর্জাতিক কূটনীতির মঞ্চে।তবে পিয়ংইয়ংয়ের বক্তব্য ভিন্ন তারা বলছে, এটি আত্মরক্ষার অংশ মাত্র। যতক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা কোরীয় উপদ্বীপে হুমকি তৈরি করে রাখবে, ততক্ষণ উত্তর কোরিয়া তার প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে।
বিশ্বরাজনীতি এখন এক নতুন দিগন্তে দাঁড়িয়ে, যেখানে এক দেশের “শক্তির প্রদর্শন” অন্য দেশের “উদ্বেগের কারণ” হয়ে উঠছে।“হোয়াসং-২০”-এর প্রদর্শন কেবল একটি সামরিক শো নয়, বরং এটি উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেওয়া এক বার্তা- “আমরা প্রস্তুত, আমরা শক্তিশালী, এবং আমরা ভয় পাই না।”
বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে কখন এই “হোয়াসং-২০” সত্যিই আকাশে উঠবে, আর সেই দিনটা মানব ইতিহাসে কী বার্তা বয়ে আনবে? আপনারা কী মনে করেন - মন্তব্যে জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন