হীরার শহর নর্ডলিঞ্জেন, যে শহর জুড়ে ছড়িয়ে আছে হাজার হাজার টন হীরা - BD Today Viral

এইমাত্র

Post Top Ad

Post Top Ad

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪

হীরার শহর নর্ডলিঞ্জেন, যে শহর জুড়ে ছড়িয়ে আছে হাজার হাজার টন হীরা

জার্মানির ছোট একটি শহর নর্ডলিঞ্জেন। ইতিহাস বিদদের মতে ৮৯৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই শহরে সর্বপ্রথম মানুষের বসতি গড়ে উঠেছিল। শহর বলতে আমাদের চোখে সাধারণত যে ছবি ভেসে ওঠে, নর্ডলিঞ্জেন ঠিক সেরকম শহর নয়। একে কিছুটা মফস্সলও বলা যায়। ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খনি লুকিয়ে আছে এই শহরে, যা শহরটিকে বিখ্যাত করে তুলেছে। নর্ডলিঞ্জেন শহরের সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হল হীরা। এই শহরের চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে হীরা। যেন হীরা দিয়েই মুড়ে দেওয়া হয়েছে এই ছোট্ট নর্ডলিঞ্জেন-কে।

Nordlingen is the city of diamonds
হীরার শহর নর্ডলিঞ্জেন

কিন্তু কোথা থেকে এলো এত হীরা? ইতিহাসবিদ, বিজ্ঞানী এবং প্রত্নতত্ত্ববিদরা গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, এই শহরের রহস্য অনেক গভীর এবং উদ্ভট। দেড় কোটি বছরের পুরনো সেই রহস্যই হীরাতে মুড়েছে নর্ডলিঞ্জেনকে। বিজ্ঞানীদের দাবি, আনুমানিক দেড় কোটি বছর আগে পৃথিবীর এই অঞ্চলে উল্কাপাতের ফলে এই শহরটির সৃষ্টি হয়েছে।


ঘণ্টায় হাজার কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসা সেই উল্কটি ২৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। সেই গর্তের উপরেই সময়ের পরিক্রমায় মাথা তুলে দাঁড়ায় নর্ডলিঞ্জেন শহর। উল্কাপাতের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ‘সুয়েভাইত’ নামে নতুন এক প্রকার পাথরের সৃষ্টি হয়েছিল। স্ফটিক, কাচ এবং হীরা দিয়ে তৈরি সেই পাথর। শহর গড়ে ওঠে সুয়েভাইত পাথরেই।


হীরা সমন্বিত পাথর দিয়ে তৈরি হওয়ায় নর্ডলিঞ্জেন শহরটিতে আজ হীরার রাজত্ব। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে হীরা। শহরের প্রাণকেন্দ্রে যে গির্জাটি রয়েছে, তাও তৈরি হয়েছে ঐ হীরক পাথর দিয়ে। সুয়েভাইত পাথরে তৈরি সেন্ট জর্জেস গির্জায় আনুমানিক ৫ হাজার ক্যারাট হিরে রয়েছে বলে দাবি করা হয়। গবেষকদের দাবি, সমগ্র নর্ডলিঞ্জেন শহরটিতে হীরার পরিমাণ আনুমানিক ৭২ হাজার টনেরও বেশি।

diamonds in hand

তবে নর্ডলিঞ্জেনে ছড়িয়ে থাকা হীরা এতোই সূক্ষ্ম যে, বাজারে এর মূল্য তেমন বেশি নয়। পাথরের সঙ্গে মিশে থাকায় হীরার অস্তিত্ব আলাদা করে খুঁজে পাওয়াও বেশ কঠিন কাজ। শুধু হীরা নয়, আরো একটি কারণে বিখ্যাত জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশের নর্ডলিঞ্জেন শহর। শোনা যায়, নর্ডলিঞ্জেন শহরে প্রাচীন কালে মানুষ তাদের নিরাপত্তার জন্য একটি প্রাচীর  তুলে দিয়েছিলেন শহরের চারদিকে। শহর ঘিরে রাখা সেই দেওয়াল আজও বর্তমান। সময় তার ক্ষয় করতে পারেনি। এতটুকুও আঁচ লাগেনি আজো এই মধ্যযুগীয় দেওয়ালে।


কেন এত পুরনো দেওয়ালের গায়ে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোনো আঁচ লাগল না, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে নানা মতো প্রচলিত রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সেই রহস্য থেকে গিয়েছে অধরা। পর্যটক এবং স্থানীয় মানুষের কাছে আজো বিস্ময় জাগায় নর্ডলিঞ্জেনের এঈ প্রাচীন প্রাচীর।


জার্মানিতে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের কাছে অতি আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু এই হীরার শহর নর্ডলিঞ্জেন। নর্ডলিঞ্জেনের কাছেই রয়েছে অফনেট গুহা, যা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসের সাক্ষী। প্রাচীন পাথরের যুগেও যে নর্ডলিঞ্জেনের অস্তিত্ব ছিল, এই গুহাই তার প্রমাণ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

Post Top Ad