ইসরাইলের সেনারা কোনো সংঘাতে বা যুদ্ধে গুরুতর আহত বা অসুস্থ হলে তাদেরকে দ্রুত সুস্থ হতে এবং দেহ মন চাঙ্গা রাখতে বাধ্যতা মূলক যৌন-পুনর্বাসনে পাঠানো হয়, তাদেরকে সেখানে সরকারি খরচে দেওয়া হয় সেক্স থেরাপি অর্থাৎ একজন সুন্দরী সারোগেট যৌনসঙ্গীর নিয়মিত সেবা।
এর অর্থ হলো- রোগীর সেবাশুশ্রূষার জন্য একজন যৌনসঙ্গীকে নিয়োগ দেওয়া, ঠিক আমাদের দেশে যেমন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখাশুনার জন্য একজন নার্সের প্রয়োজন হয়।
সেক্স থেরাপি, এ বিষয়টি একান্তই গোপনীয় এবং বিতর্কিত বলেই পৃথিবীর আর কোন দেশেই এ নিয়ম চালু হয়নি। তবে শুধু মাত্র ইসরাইলে সেনাদের জন্য এই থেরাপি চালু করা হয়েছে। ইসরাইলী সেনা দের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের যেসকল সেনা ইসরাইলে কর্মরত আছে তারাও এই সেবার আওতায় রয়েছে। এজন্যই দেখাযায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, হাঙ্গেরি, ইতালির সৈন্যরা ইসরাইলী সেনাদের সাথে কাজ করতে অপেক্ষার প্রহরগুণে।
তেলআবিবে অবস্থিত সেক্স থেরাপিস্ট রোনিট আলোনির ক্লিনিকের কনসালটেশন রুমগুলো দেখতে আর দশটা সাধারণ ক্লিনিকের মতোই।
এই হসপিটালটির প্রতিটি কনসালটেশন রুমে রোগীদের জন্য আরামদায়ক একটি সোফা আছে। আর আছে নারী ও পুরুষের যৌনাঙ্গের জীববৈজ্ঞানিক চিত্র, যা হপিটালটির ডাক্তাররা ব্যবহার করেন একজন রোগীকে বিভিন্ন বিষয় বুঝিয়ে বলার জন্য।
কিন্তু এর পাশের ঘরটিতে যা হয়, তা বেশ অবাক হওয়ার মতোই। এতে আছে একটি বিছানা, একটি সিডি প্লেয়ার, ও মোমবাতি। আর ঘরের দেয়ালে আছে যৌনউত্তেজক নানা শিল্পকর্ম। তার পাশেই আছে একটি স্নান ঘর। এখানে যেমনি পুরুষ রোগীর জন্য আছে নারী পার্টনার, ঠিক তেমনি নারী রোগীদের জন্য আছে পুরূষ পার্টনার।
অবশ্য অনেক সমালোচকরা একে দেহ ব্যবসার সঙ্গে তুলনা করেছেন। কিন্তু ইসরাইলে এটা এতটাই গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে যে, যেসব সেনা আহত বা অসুস্থ হয়েপড়ে তাদের দ্রুত সুস্থতার জন্য বহু যুগ ধরে এই থেরাপির খরচ বহন করছে রাষ্ট্র।
এখানকার ডক্টররা বলেন, রোগীরা এখানে আসে চিকিৎসার জন্য, আনন্দের জন্য নয়। এখানে দেহ ব্যবসার সঙ্গে মিলে যায় এমন কিছুই নেই। এখানকার থেরাপির সেশনগুলোর বিষয় হচ্ছে একান্ত ঘনিষ্ঠতা, স্পর্শ, মিলন, দেওয়া-নেওয়া, যোগাযোগ, মানসিক-শারীরিক ইত্যাদি...। তবে হাঁ, সারোগেটরা তাদের রোগীদের সাথে হসপিটালের বাইরে আর কখনোই যোগাযোগ করতে পারেন না।
এই হসপিটালটি গড়ে উঠেছে ১৯৮০-এর দশকে যৌন সারোগেট বিষয়ে নেতৃস্থানীয় ইসরাইলের ইহুদি ধর্মগুরুদের অনুমোদন নিয়ে। ধর্মগুরুরা একটি নিয়ম বেঁধে দিয়েছিলেন যে, কোনো বিবাহিত পুরুষ বা নারী সারোগেট হিসেবে কখনো কাজ করতে পারবে না। হসপিটালটি এখন পর্যন্ত সেই নিয়ম মেনে চলছে।
বর্তমানে তিন মাসব্যাপী এই থেরাপি কর্মসূচিতে জনপ্রতি রোগীর মোট ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৪০০ ডলার। প্রতিমাসে এখানে থেরাপি গ্রহণ করতে আসে নারী-পুরুষ সহ মোট প্রায় ১০০ সেনা। ঘোটনার প্রেক্ষিতে এই সংখ্যা কম বেশিও হয় বলে জানিয়েছে হসপিটাল সূত্র।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন