পর্দার নাম মেরিলিন মনরো। প্রকৃত নাম নর্মা জিন মর্টেনসন। মেরিলিন মনরো নামেই বিশ্বে ঝড় তুলেছিলেন মার্কিন এই মডেল ও অভিনেত্রী। ১৯২৬ সালের ১ জুন তার জন্ম হয়েছিল লস অ্যাঞ্জেলেসে। খুব ওল্প সময়ের মধ্যেই জায়গা করেছিলেন হলিউডের প্রথম সারিতে। আজও পৃথিবীর সব থেকে গ্ল্যামারাস আর সেক্স সিম্বল নারী তাঁকেই মনে করা হয়।
![]() |
মেরিলিন মনরো |
বেঁচে থাকলে আজ মেরিলিন মনরোর বয়স হতো ৯৫ বছর। ১৯৬২ সালের ৪ আগস্ট তিনি নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর ৫৯ বছর পরেও নেভেনি মেরিলিন মনরো সৌন্দর্যের প্রদীপ। আমেরিকার পাম স্প্রিংস আর্ট মিউজিয়ামের সামনে তার ঐতিহাসিক উড়ন্ত স্কার্টের ২৬ ফুট উঁচু মূর্তিটি আজও দাঁড়িয়ে আছে।
![]() |
মেরিলিন মনরোর মূর্তি |
লস অ্যাঞ্জেলেসে তার জন্ম হয়েছিল মানসিক ভারসাম্যহীন এক মায়ের কোলে। কখনোই জানতে পারেননি নিজের পিতৃপরিচয়। রুপালি জগতের আলো, তাঁর সৌন্দর্যের প্রতি পুরুষের গভীর প্রবল আকর্ষণ- এই সব ছাড়িয়েও তিনি হলিউডের এক সফল গায়িকা,মডেল এবং অভিনেত্রী।
![]() |
মেরিলিন মনরো এবং তার মা |
ডেঞ্জারাস ইয়ার্স (১৯৪৭), অ্যাজ ইয়ং অ্যাজ ইউ ফিল (১৯৫১), লেটস্ মেক ইট লিগাল (১৯৫১), দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য শোগার্ল (১৯৫৭), মাঙ্কি বিজনেস (১৯৫২), দ্য সেভেন ইয়ার ইচ (১৯৫৫), দুই দশকের ক্যারিয়ারে মোট ৩৪টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। একাধিক বিয়ে, প্রেম, সম্পর্কের গুঞ্জন- ব্যক্তিগত জীবনেও কম বিতর্ক ছিল না এই গ্ল্যামার কুইন মেরিলিন মনরো।
১৬ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে করেন তিনি। তারপর আরও দুইবার বিয়ের সম্পর্কে আবদ্ধ হন মেরিলিন। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। লার্জার দ্যান লাইভ, অসম্ভব সাফল্যের আড়ালেও একাকীত্বে ভুগতেন এই অভিনেত্রী। ২৫ বছর বয়সের আগেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনবার। শোনা যায় ২৯ বছরের মধ্যে গর্ভপাত করিয়েছিলেন মোট ১২ বার। তার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে ৩৭ জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের নাম পাওয়া যায়।
জড়িয়েছিলেন কেনেডি ব্রার্দাসদের প্রেমে। মনে করা হয়, সেই সম্পর্কই জীবনের ইতি টানল মেরিলিন মনরোর। মনরো গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রথমে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এবং পরে তার ভাই রবার্ট কেনেডির সঙ্গে। তবে সম্পর্কের স্বীকৃতি পাননি কখনোই। জন কেনেডি তাকে ডাকতেন সুইট ক্যান্ডি নামে।
![]() |
রবার্ট কেনেডির সঙ্গে মেরিলিন মনরো |
পরবর্তীতে লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন গ্ল্যামার কুইন। সরকারি ভাবে বলা হয় আত্মঘাতী হয়েছিলেন মনরো। তবে কেন মৃত্যুকে বরণ করলেন তিনি, কেন তার হাতে ফোনের রিসিভার ছিল, কেনই বা নগ্ন অবস্থায় চাদরের তলায় পাওয়া গিয়েছিল তাকে- এসব প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি। শুধু জানা যায়, তার রক্তে ছিল অস্বাভাবিক পরিমাণে ঘুমের ওষুধ।
![]() |
বিছানায় মৃত মেরিলিন মনরো |
আত্মশক্তি, বডি পজিটিভ, নারীবাদী, ফরওয়ার্ড থিংকার- এই বিশেষণগুলো তখন শক্ত থাবা বসায়নি মানুষের মনে। আজ হয়তো মনরো থাকলে তাকে নিয়ে কাহিনি সেজে উঠত অন্যভাবে। কে বলতে পারে তখন কেবলমাত্র সেক্স সিম্বল, ব্লন্ড বম্বশেল-এর তকমায় আটকে থাকতে হত না ৩৬ বছর বয়সী সব থেকে আকর্ষণীয় এই যুবতীকে।
![]() |
মেরিলিন মনরো |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন