দুই কিলোমিটার দীর্ঘ ট্রেন বানিয়ে ইতিহাস গড়েছে সুইজারল্যান্ড। আলপ্স পর্বতমালার ওপর দিয়ে ২৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে রেকর্ড গড়ে ফেলেছে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী ট্রেন।
১০০ বগির ট্রেনটিতে আসন সংখ্যা ৪,৫৫০টি। এর ধারণ ক্ষমতা ২,৯৯০ টন। আলপ্স পর্বতমালার ওপর দিয়ে ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েই বিশ্বরেকর্ড গড়েছে ট্রেনটি।
সুইস রেলওয়ে তাদের ১৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে এমন উদ্যোগ নেয়। দিবসটি উপলক্ষে গত শনিবার সুইস রিহেটিয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা এই যাত্রীবাহী ট্রেনটি চালায়। সাড়ে চার হাজার আসনের ট্রেনটিকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ যাত্রীবাহী ট্রেন বলা হচ্ছে।
ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি পাওয়া পূর্ব সুইজারল্যান্ডের প্রেডা থেকে আলভ্যানিউ পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিতে ট্রেনটির সময় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রেডা ও আলভ্যানিউর উচ্চতা যথাক্রমে ১,৭৮৮ মিটার। ১,৯১০ মিটার লম্বা ট্রেনটি যাত্রা পথে ২২টি টানেল ও গভীর খাদের ওপর দিয়ে ৪৮টি সেতু পার হয়েছে। এ পথ পাড়ি দিতে ৭ জন চালক ও ২১ জন প্রকৌশলী এ ট্রেনের নেতৃত্বে ছিলেন। ট্রেনের প্রধান চালক ৪৬ বছর বয়সি আন্দ্রিয়াস ক্রেমার বলেন, সবার কাছে আলবুলা লাইন সুপরিচিত। ট্রেনের গতি ও অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুন্দর ভাবে নিয়ন্ত্রণে ছিল।
১০০ বগির ট্রেনটিতে আসন ছিল ৪ হাজার ৫৫০টি এছাড়া ট্রেনের সাত চালক বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ অতিক্রমের সময় নিজেদের মধ্যে রেডিও বা সেলফোনেও যোগাযোগ রাখতে পারছিলেন না। পরে বিশেষ যোগাযোগব্যবস্থা চালু করে একই গতিতে ট্রেনটি পরিচালনায় সক্ষম হন চালকেরা।
বিস্তৃত উপত্যকা ও সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেনটির গতি ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার রাখা হয়। ট্রেনটি চলাচলের দৃশ্য টেলিভিশনে লাইভ দেখানো হয়েছিল। ছবি ধারণ করতে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়। সেদিন আলবুলা টানেল থেকে সেন্ট মরিৎজ পর্যন্ত অন্যান্য ট্রেন চলাচল ১২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
এর আগে সবচেয়ে লম্বা যাত্রীবাহী ট্রেনের রেকর্ড ছিল বেলজিয়াম রেলওয়ের দখলে। ১৯৯১ সালে যাত্রীবাহী দীর্ঘ ট্রেনের রেকর্ড গড়েছিল ন্যাশনাল বেলজিয়ান রেলওয়ে কোম্পানি। ৭০ বগি দিয়ে সাজানো সে ট্রেনের দৈর্ঘ্য ছিল ১,৭৩২ মিটারের একটু বেশি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন