ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত চীনের জন্য একটি ‘দুর্লভ গোয়েন্দা সুযোগ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চীন মূলত চলমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ভারতীয় সামরিক কৌশল, প্রযুক্তি ও যুদ্ধ পরিচালনার সক্ষমতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে। ‘বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এটি চীনের সীমান্তের পাশে একটি বিরল লক্ষ্য, যা একটি সম্ভাব্য প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে জড়িত।পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে থাকা চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান অন্তত দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। যার একটি আবার ফরাসি রাফাল। যদিও ভারত এখনো কোনো যুদ্ধবিমান ক্ষতির কথা স্বীকার করেনি।
পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই রাষ্ট্র ৩,৮০০ কিমি দীর্ঘ বিতর্কিত হিমালয় সীমান্ত ভাগাভাগি করেনিয়েছিল। ১৯৬২ সালে সীমান্ত নিয়ে যুদ্ধ ও ২০২০ সালের উত্তেজনার পর দুই দেশ সীমান্তে টহল নিয়ে সমঝোতায় ও পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংঘাতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের তথ্য—বিশেষ করে ব্রাহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র—চীনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ক্ষেপণাস্ত্র এখনো কোনো সরাসরি সংঘাতে ব্যবহার করা হয়নি।
লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণা সংস্থা (আইআইএসএস) জানায়, চীনের বর্তমানে ২৬৭টি কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে। যার মধ্যে ১১৫টি সরাসরি গোয়েন্দা কাজে এবং ৮১টি ইলেকট্রনিক ও সিগন্যাল নজরদারিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই সংখ্যাটা ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এ ক্ষেত্রে কেবল যুক্তরাষ্ট্রের পরেই অবস্থান চীনের।
জানা যায় গত সপ্তাহে আরব সাগরে ভারতীয় নৌ-মহড়ার সময় ২২০টিরও বেশি চীনা মাছ ধরার জাহাজ এক সঙ্গে ১২০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে চলে আসে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই জাহাজগুলো ‘সামুদ্রিক মিলিশিয়া’ হিসেবে তথ্য সংগ্রহের কাজ করে আসছিল।
পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের ‘অল-ওয়েদার স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’ বেশ কয়েক দশক ধরেই শক্তিশালী। ভারত ও চীন উভয়েই পরমাণু শক্তিধর এবং আঞ্চলিক মহাশক্তি। সীমান্ত সংঘর্ষ, সামরিক মহড়া এবং চীনের আধুনিক গোয়েন্দা প্রযুক্তির মাধ্যমে গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন নিরাপত্তা ভারসাম্য গড়ে উঠতে চলেছে।যার জটিলতায় পাকিস্তান ও কাশ্মীর এখন কেন্দ্রবিন্দুতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন