ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের আমলে ২০২৫ সালের ১৫ মার্চ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক বিমান হামলা শুরু করে, যা পশ্চিম এশিয়ায় তাদের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই অভিযানে ইয়েমেনের বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে শত শত হামলা চালানো হয়েছে। এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের হ্যারি ট্রুম্যান ও কার্ল ভিনসন বিমানবাহী রণতরী থেকে স্ট্রাইক এয়ারক্রাফট এবং বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহার করেছে। এর পাশাপাশি ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া ঘাঁটিতে বি-২ বোমারু বিমান মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে সকল হামলা উপেক্ষা করে ইয়েমেনি প্রতিরোধ বাহিনী আনসারুল্লাহ ইসরাইলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছে। এ পর্যন্ত ৭০০-রও বেশি বিমান হামলা পরিচালিত হয়েছে কিন্তু কোনো সাফল্য অর্জিত হয়নি। বরং, ইয়েমেনি বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ হ্যারি ট্রুম্যান ২টি F/A-18 যুদ্ধবিমান হারিয়েছে।তবে মজার ব্যাপার হল ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর জাহাজ-বিধ্বংসী অস্ত্রাগারের ভয়ে বর্তমানে মার্কিন নৌবহরটি দেশটির উপকূল থেকে ১,০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
মার্কিন বাহিনী এই অভিযানে ১৪ টন ওজনের এবং শক্ত কংক্রিট ও পাথর ভেদ করতে সক্ষম এমন কি তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী GBU-57 MOP ‘ বাংকার-বাস্টার’ বোমার ব্যবহার করেছে। তবে বাস্তবিক ফলাফলে দেখা গেছে, মার্কিন বাহিনী এই অভিযানে সফল তো হয় ই নি এমনকি ইয়েমেনি টানেল ও আন্ডারগ্রাউন্ড সামরিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করতে পারেনি,ইয়েমেনের অস্ত্রভাণ্ডারকে ও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারেনি। বরং এটি মার্কিনীদের ভীতি ও হঠকারিতা প্রকাশ করে।মার্কিন বাহিনী ভুলভাবে ভাবছে যে তারা একটি দুর্বল ও অনুন্নত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়ছে। কিন্তু বাস্তবে, ইয়েমেনি যোদ্ধারা বিভিন্ন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে কৌশলগত দক্ষতা ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য যে , ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ২৭টি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার আনুমানিক ক্ষতিপূরণমূল্য ৮০০ মিলিয়ন ডলার।
তবে সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করলে যা বোঝা যাচ্ছে যে মার্কিন সামরিক কৌশল ইয়েমেনে কার্যকর না হওয়ার প্রধান কারণ হলো প্রতিরোধকেন্দ্রিক যুদ্ধ কৌশল, ভূগর্ভস্থ স্থাপনার জটিলতা এবং ইয়েমেনিদের পেশাদার সামরিক প্রস্তুতি। যুক্তরাষ্ট্র তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করেও ব্যর্থ হয়েছে । এই পরিস্থিতি স্পষ্ট করেছে যে, প্রযুক্তির জয় সবসময় হয় না আত্মবিশ্বাস, অভিজ্ঞতা এবং কৌশলগত মেধাই আসল বিজয়ের পথ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন