শতক বছর আগে দামেস্কের ব্যস্ততম শহরে জয়নব নামে এক তরুণী বাস করতেন, যিনি আল্লাহর প্রতি তার ভক্তি এবং তার অটল বিনয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি স্বর্বদা পর্দা করে পথ চলতেন, পর্দাকে তিনি দেখতেন নারীর মর্যাদা ও শক্তির প্রতীক হিসেবে। যদিও অনেকে তার পর্দা করা নিয়ে হাসি-ঠাট্রা করতেন কিন্তু জয়নব কখনোই সেদিকে কর্ণপাত করতেন না।
প্রতিদিন সকালে, তিনি স্থানীয় মাদ্রাসায় হেঁটে যেতেন, যেখানে তিনি এতিম মেয়েদের কুরআন শিক্ষা দিতেন। তার কোমল কণ্ঠস্বর এত স্পষ্টভাবে আয়াত পাঠ করত, যা ছোটদের হৃদয়কে মুগ্ধ করত।
একদিন, উমর নামে একজন ধনী ব্যবসায়ী কিছু বই ও কোরআন দান করার জন্য মাদ্রাসায় আসেন। তিনি জয়নবকে শিশুদের পড়াতে দেখেন এবং তার চরিত্র দেখে মুগ্ধ হন এবং কৌতূহলী হয়ে উমর প্রধান শিক্ষককে তাঁর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
উমর জয়নবের বাড়িতে তাঁর মায়ের কাছে জয়নবকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠালেন। এ ব্যাপারে জয়নবকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "আমি এমন একজন পুরুষকে খুঁজছি যিনি সম্পদের চেয়ে তাকওয়া (আল্লাহর প্রতি-সচেতনতা) কে মূল্যবান বলে মনে করেন এবং যিনি আমার পর্দাকে আমার শক্তি হিসাবে সম্মান করবেন।" তার কথায় রাজি হয়ে উমর বিনীত ভাবে নিজের সম্মতি জানালেন।
তারা বিয়ে করলেন, এবং তাদের ঘর শিক্ষা ও ইসলাম ধর্ম পালনের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠল। জয়নব তার মাদ্রাসায় শিক্ষাদান চালিয়ে গেলেন, এবং তার পর্দায় আবদ্ধ উপস্থিতি দামেস্কে ধার্মিকতার প্রতীক হয়ে উঠল। লোকেরা বুঝতে শুরু করল যে পর্দা এবং বিনয় নীরবতা নয় - এটি ছিল একটি শক্তি, প্রজ্ঞা এবং প্রশান্তি।
কিছুদিন পর তাদের ঘর আলোকিত করে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হল। একদিন সে তার মাকে জিজ্ঞেস করল- "মা তুমি এত সুন্দর! তাহলে বোরখা পর কেন?" জয়নব মৃদু হেসে উত্তর দিলেন, "আমার সন্তান, পর্দা সৌন্দর্যকে আড়াল করার জন্য নয় - বরং এটি আত্মাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। মনেরেখো- তোমার প্রকৃত সৌন্দর্য তোমার চরিত্রে এবং আল্লাহর সাথে তোমার সংযোগে।"
জয়নবের গল্প দামেস্কের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ল, রহস্যের গল্প হিসেবে নয়, বরং শক্তি, বিনয় এবং বিশ্বাসের উজ্জ্বল আলোর উত্তরাধিকার হিসেবে। নারীর মর্যাদা হিসেবে।
বন্ধুরা এ গল্প থেকে তোমরা কে কি শিখলে তা কমেন্ট করতে ভুলবেনা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন