![]() |
b-21 রাইডার স্টিলথ বোমার |
৩০ বছর পর সম্পূর্ণ নতুন একটি স্টিলথ বোমারু বিমান উন্মোচন করল মার্কিন বিমান বাহিনী। স্থানীয় সময় শুক্রবার ২ ডিসেম্বর বি-২১ রেইডার নামের ওই অত্যাধুনিক বিমানটি প্রকাশ্যে আনে। বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যেই রহস্যে ঘেরা বি-২১ রেইডার স্টিলথ বোমারু বিমানটি প্রকাশ্যে আনেছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্মাতা কোম্পানি নরথ্রপ গ্রুমানের দাবি, সর্বকালের সর্বাধুনিক সামরিক বিমান এটি। বর্তমান এফ-৩৫ এবং বি-২ স্পিরিট বোমারু বিমানগুলোর সব ঘাটতি ও দুর্বলতা দূর করে বি-২১ রেইডার তৈরি করা হয়েছে। জানা যায়, বিমানটির পুরো নাম নরথ্রপ গ্রুমান বি-২১ রেইডার। ২০১০ সালে পরবর্তী-প্রজন্মের দূরপাল্লার কৌশলগত এ বোমারু বিমান তৈরির জন্য ২ হাজার ৫১০ কোটি ডলারের বাজেট ঘোষণা করে তৎকালীন ওবামা সরকার।
নরথ্রপ গ্রুমান বি-২১ রেইডার নির্মাণের কাজটি পেয়েছিল ২০১৫ সালে। কিন্তু গত সাত বছর ধরে এর নকশা ও নির্মাণ প্রক্রিয়া নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়েছে। মার্কিন বিমানবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার পামডেলে গ্রুমানের কারখানায় নতুন এই স্টিলথ বম্বার উন্মোচন করা হয়। এদিকে, ঘটা করে উন্মোচন করা হলেও, বি-২১ রেইডারের সক্ষমতা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ও নির্মাতা কোম্পানি।
![]() |
বি-২১ রেইডার |
অত্যাধুনিক রাডারের চোখ ফাঁকি দিয়ে শত্রুদের ঘাটিতে ঢুকে তথ্য সংগ্রহ ও আক্রমণের করতে সক্ষম হওয়ায় সামরিক খাতে আলাদা কদর আছে স্টিলথ প্রযুক্তির বিমানের। এ প্রযুক্তিগত বিমানের কারণেই তিন দশক ধরে আন্তর্জাতিক আকাশ সীমায় নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে পেরেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। বি-২১ রেইডারের পূর্বসূরী বি-২ স্পিরিটের নকশাও করেছিল নরথ্রপ গ্রুমান। একবারে ২০ টন বোমা বা বিধ্বংসী অস্ত্র বহনের সক্ষমতা আছে বি-২ স্পিরিটের।চীন দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের স্টিলথ প্রযুক্তির বিমানকে তার সবচেয় বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছিল। তাদের গবেষণা ইউনিট এ লক্ষ্যে নির্মাণ করেছিল জিয়ান এইচ-২০ স্টিলথ ডিপ-পেনেট্রেশন বোমারু বিমান। কিন্তু এখন বি-২১ রেইডার চীন এবং রাশিয়াকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে স্পেস ডটকম জানিয়েছে, পাইলটসহ ও পাইলট ছাড়া ওড়ার সক্ষমতা আছে বি-২১ রেইডারের। সাধারণ বোমা ছাড়াও পরমাণু অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে সক্ষম এটি। আকাশ থেকে গুপ্তচরের মতো নজরদারি চালানোর, রাডার জ্যাম করা ও প্রতিপক্ষের যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সক্ষমতাও রয়েছে এ বিমানটিতে।বি-২১ রেইডারের নকশা করা হয়েছে ‘ওপেন সিস্টেম আর্কিটেকচার’ প্রক্রিয়ায়। অর্থাৎ প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে নতুন স্টিলথ বম্বারের অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তিও আপগ্রেড করার সুযোগ রয়েছে।
![]() |
বি-২১ রেইডার -এর ব্যবহৃত অস্ত্র |
নরথ্রপ গ্রুমানের অ্যারোনটিক্স সিস্টেমসের মহাব্যবস্থাপক ডাগ ইয়াং এক বিবৃতিতে বলেন, বিমানটি তৈরিতে সর্বাধুনিক উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা কাজে লাগানো হয়েছে। নরথ্রপ গ্রুমান আরও জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার পামডেল শহরের কারখানায় এখনো নির্মাণাধীন রয়েছে ছয়টি নতুন বি-২১ রেইডার। ২০২৩ সালে বি-২১ রেইডারের প্রথম মিশন পরিচালনার কথা জানিয়ে রেখেছিল মার্কিন বিমান বাহিনী। তবে এটির লক্ষ্যবস্তু কী হবে, তা নিয়ে কিছু জানায় নি। মার্কিন বিমানবাহিনী প্রধান জেনারেল চার্লস ব্রাউন জুনিয়র বলেন, বি-২১ রেইডারের উন্মোচন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ও জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের সামরিক শক্তি আরও সমৃ্দ্ধ হলো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন